পোলাও চালের খুদের জাউ ভাত

পোলাও চালের খুদের জাউ ভাত

আপনারা খুদের জাউ খেয়েছেন? আশির দশকের কথা। আমার দাদি প্রায়ই খেতেন। ঢেঁকিতে চাল করতে গিয়ে অনেক খুদ বের হতো, বিশেষ করে আতপ চালের খুদ। দাদি মাটির হাড়িতে খুদ বসিয়ে দিতেন, একটু মোটা লবণ আর অনেক পানি দিয়ে, জাউ ভাত রান্না হতো, আর সাথে শুকনা মরিচ বাটা। ওনার একটা টিনের প্লেট ছিলো, ওটাতে খুদের জাউ আর লাল মরিচ বাটা মাখিয়ে খেতেন, ফুফুরাও খেতো। তরকারি ভাত রেখে দিতেন পরিবারের পুরুষ সদস্যদের জন্য। আমি ছোট ছিলাম, দাদির পেছন পেছন লেগে থাকতাম সারাদিন। আমাকেও খাওয়াতেন। ফুফুরা বলতো, আম্মা, ওরে যে দিতেছেন, ঝালে তো মরবে। দাদি বলতেন, আরে মইরতো নো, মইরতো নো, মাইয়া মাইনষের জান, এত সহজে মইরতো নো।


সেসময় এলাকায় নিত্যদিনের বাজার বসতো না, সপ্তাহে একবার গঞ্জের হাট থেকে বাজার হতো, গঞ্জ থেকে অতি প্রয়োজনীয় জিনিস কেনা হতো, যেমন- হারিকেন জ্বালানোর জন্য কেরোসিন তেল। অতো তেল মশলা খাওয়ার প্রচলন ছিলো না। বাড়ির উঠানে কিছু শাক সব্জির গাছ লাগিয়ে মাচায় তুলে দেয়া হতো, একটু কিছু রান্না করেই সবাই খেয়ে নিতো, এখনকার মতো অতো সবজি, হাইব্রিড কিছু ছিলো না।


আমি এখনো খুদের জাউ খাই প্রায়ই, বড় হয়ে জানলাম- জাউ ভাত সহজে হজম হয়, স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, বিশেষ করে যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে, তাদের নরম খাবার খাওয়াই ঠিক।
ছবি- পোলাও চালের খুদের জাউ।

Back to blog